ইসলাম ডেস্ক:
রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত। এই তিনভাগে পবিত্র রমজান মাসকে ভাগ করা হয়েছে।
রমজান হলো প্রশিক্ষণের মাস। মহান আল্লাহ চান তাঁর বান্দা তাঁর গুণাবলি
অর্জন করে সেই গুণে গুণান্বিত হোক। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
‘তোমরা আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হও।’
প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তিই এই রমজান মাসে সারা বছরের নেকি ও পূণ্যের
ঘাটতি পূরণের প্রাণান্তকর চেষ্টা করে থাকেন। ইবাদতের মাধ্যমে রহমতের ১০ দিন
অতিবাহিত করার পর মুমিন ব্যক্তিরা মাগফিরাত লাভের আশায় আল্লাহ পাকের
দরবারে নিজেকে নতুন করে নিয়োজিত করে।
কিন্তু রোজার মাসে রোজাদারদের কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়। যেহেতু হঠাৎ
করে নতুন অভ্যস্ততা তৈরি করতে হয় তাই রোজা শরীরের জন্য একদিকে যেমন ভালো
অন্যদিকে সাবধানী না হলে ক্ষতিরও সম্ভাবনা থাকে। কেউ কেউ রোজা রাখার
বিপক্ষে অজুহাত সৃষ্টি করেন এই বলে যে, রোজা রাখলে এসিডিটি বেড়ে যাবে; দেখা
দেবে পেপটিক আলসার। আবার অনেকে ওষুধ খেতে অসুবিধা হবে এমন কথাও বলে থাকেন।
তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, রোজায় বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
রোজার মাসে প্রতিদিনের খাবারদাবার ও জীবনযাপন কেমন হবে এ নিয়ে ১১টি টিপস তুলে ধরা হলো:
১. ভাজাপোড়া কম খান: রোজার মাসে মাছ ডাল ভাত আদর্শ খাবার। ভোররাতে গরুর
মাংস এড়িয়ে মুরগি খেলে ভালো। শাক সবজি ও ডাল শরীরের জন্য ভালো। যে
খাবারকে ক্ষতিকর মনে হবে সেটি বাদ দিতে হবে।
২. খাদ্য তালিকায় কী থাকবে: পানি, ফল, চিড়া, রুটি, ভাত, সবজি, ডাল,
ডিম, হালকা খিচুড়ি খাওয়া যেতে পারে। মানসম্পন্ন হালিম শরীরের জন্য
উপকারী। এটি শক্তি বাড়ায়।
৩. খাবারে সতর্কতা: সারা দিন পেট খালি রেখে সন্ধ্যায় ইফতারের পর
বিরিয়ানি, তেহারির মতো ভারী খাবার না খাওয়াই ভালো। তবে মাঝেমধ্যে ইফতারির
পর হালকা ও কম তেলযুক্ত তেহারি খাওয়া যেতে পারে।
৪. নিয়মিত খাবারকে গুরুত্ব: এমনিতে সারা বছর প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়
যা থাকে সেগুলোই খাওয়া ভালো। সাধারণত একজন মানুষ নিয়মিত যেসব খাবার খান
রোজার সময়েই সেগুলোই তার জন্য যথেষ্ট। তবে পানি খেতে হবে পর্যাপ্ত।
৫. শারীরিক পরিশ্রম কম করুন: যেহেতু সারা দিন কিছু খাওয়া হয় না তাই
প্রয়োজনের বাইরে শারীরিক পরিশ্রম কম করতে হবে। তাই বলে একেবারে অলস থাকা
যাবে না।
৬. হজম হয় এমন খাবার: সহজে ও দ্রুত হজম হয় এমন খাবারই রোজার মাসে খাওয়া
উচিত। রোজা পালনকারী ব্যক্তিকে বুঝতে হবে কোন খাবারগুলো তার সহজে হজম হয়।
এসব খাবারকেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা রোজার সময় শরীরের এনজাইম যা
হজম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয় সেটি বন্ধ থাকে।
৭. খেতে হবে সীমিত: দিন শেষে ইফতার কিংবা ইফতারের পর গলা পর্যন্ত খাওয়া
যাবে না। বেশি খেলে সেটি ক্ষতিকর হতে পারে। ফল ও সবজি দিয়ে পরিমাণ মতো
ইফতার করা ভালো।
৮. খাদ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া: ইফতারের সময় তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ভালো করে
চিবিয়ে খেতে হবে। ইফতারির শুরুতেই পানি শরীরের জন্য উপকারী। পাশাপাশি
খেজুর শরীরে বাড়তি শক্তির যোগান দেয়।
৯. স্যুপ: স্যুপ শরীরকে সতেজ রাখে। তাই রোজার মাসে ইফতারের পর একটু
স্যুপ খেতে পারলে ভালো। এটি খাবার হজম প্রক্রিয়াতেও সাহায্য করে।
এক্ষেত্রে শাক সবজি বা ফুলকপির স্যুপ বা লেটুস পাতার স্যুপ অনেক উপকারী।
১০. জীবনাচরণ: রোজার মাসে শুধু খাবারই নয়, বরং এর পাশাপাশি প্রয়োজন
পর্যাপ্ত ঘুম। ইফতারের পর বা সেহরির পর ধূমপানের অভ্যেস থাকলে বিরত থাকুন।
১১. ওষুধ সেবনকারীদের রোজা: অনেকেই ওষুধ খাওয়ার অজুহাতে রোজা রাখেন না।
তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে রোজা রেখেও ওষুধ সেবন করা সম্ভব। সময়টা শুরু
পরিবর্তন করে নিলেই হয়। সেটা হতে পারে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত। তবে
এক্ষেত্রে চিকিৎসবের পরামর্শ মেনে চলা ভালো।
খবর বিভাগঃ
ইসলাম
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়