Wednesday, June 10

গোায়াইনঘাটে ফের বন্যা॥ তলিয়ে গেছে জাফলং চা বাগান


মনজুর আহমদ, গোয়াইনঘাট থেকেঃ সিলেটের গোায়াইনঘাট উপজেলায় ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। পাহাড়ী ঢল আর অবিরাম বৃষ্টির পানিতে উপজেলার নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী রয়েছে অনেক এলাকার মানুষ। উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যায় জাফলং চা-বাগানে চা-শ্রমিকদের বসত বাড়ীসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দেশেরে বৃহত্তম দু‘টি পাথর কোয়ারীসহ সকল প্রকার পাথর উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে । শ্রমিক ও অসহায় মানুষ তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে রয়েছেন বিপাকে। অবিরাম বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পিয়াইন ও সারী নদীর ঢলে উপজেলার সর্বত্র প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রোপা আউশ, আউশের বীজতলা এবং রোপা আউশ ও ইরি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। পিয়াইন ও সারী নদী দিয়ে আসা ঢলে উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন, আলীরগাঁও ইউনিয়ন, রুস্তুমপুর ইউনিয়ন, ডৌবাড়ী ইউনিয়ন, লেঙ্গুড়া ইউনিয়ন, তোয়াকুল ইউনিয়ন, নন্দীরগাও ইউনিয়ন ও পশ্চিম জাফলংসহ সর্বত্র পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। তাছাড়া,উপজেলার সদরের সাথে যোগাযোগের দু‘টি রাস্তা সারী-গোয়াইন ও সালুটিকর-গোয়াইনঘাট রাস্তার বিভিন্ন স্থানে সড়কের অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চারদিকে পানি থাকায় এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কম। বুধবার উপজেলা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ গ্রামের চারপাশে পানি। তাই বাড়ী থেকে লোকজন বের হতে পারছেন না। সারী-গোয়াইনঘাট-সড়কের লাফনাউট, কমপুর, বেকরা, বার্কীপুরসহ বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। জাফলং পিয়াইন নদীতে ডাউকী নদীর ঢলে কোয়ারী বন্ধ রয়েছে। হাজার হাজার নৌকা সারিবদ্ধভাবে নদীর তীরবর্তী এলাকায় শ্রমিকরা বেঁেধ রেখেছেন। পাথর শ্রমিক আকবর আলী জানান,পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিকরা খুব কষ্টে রয়েছেন। রাধানগর বাজারের ডাঃ হেলাল উদ্দিন রাধানগরসহ আশপাশের এলাকার মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। এছাড়া রাধানগর-হাদারপার সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, দ্রুত সড়ক নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টরা প্রশাসনের প্রতি তিনি জোর দাবি জানিয়েছেন। জাফলং চা-বাগানের শ্রমিক নেতা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য শারবেন মাহালী জানান, বাগানের পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। শতাধিক শ্রমিকদের বসতঘর পানির নীচে তলিয়ে ঘেছে। শ্রমিকদের উদ্ধার কাজ চলছে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে আরও পানি বৃদ্ধি হলে বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন জানান,উপজেলায় ২য় দফায় পানি বৃদ্ধি হয়েছে। প্রত্যেক ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা প্রাপ্তির পর তা জেলা প্রশাসকের কাছে প্রেরণ করা হবে। সারি-গোয়াইনঘাট সড়কে জাল ফেলে মাছ ধরার দৃশ্য-মনজুর আহমদ সারি-গোয়াইনঘাট সড়কে জাল ফেলে মাছ ধরার দৃশ্য-মনজুর আহমদ উপজেলা পরিষদের চেয়ানম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের কথা জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়