Tuesday, December 2

কানাইঘাটে ওসির অপসারনের দাবীতে গভীর রাতে মিছিল



মো: মাহতাব আহমদ(সেলিম)
: ভুক্তভোগী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সমস্যা নিয়ে থানায় বিভিন্ন সময়ে যাওয়ার পরও কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরী কোন সহযোগীতা করে থাকেন না এমন অভিযোগ এনে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তার অপসারন দাবী করে কানাইঘাট পৌর শহরে মিছিল করেছে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীরা। গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌর শহরে অনুষ্ঠিত মিছিল পরবর্তী পথসভায় ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরীকে দুর্নীতিবাজ ও বিএনপি জামায়াত জোটের আশ্রয় ও পশ্রয়দাতা উল্লেখ করে তার অপসারন দাবী করে পৌর আ’লীগের আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় অতচ ভুক্তভোগী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সমস্যা নিয়ে থানায় গেলে ওসি আমাদের কথা শুনেন না। তিনি দূর্নীতিবাজদের নিয়ে ব্যস্ত থেকে লোটপাট করে যাচ্ছেন। এটা আর চলতে দেওয়া হবে না। ওসিকে আগামী ৪৮ঘন্টার মধ্যে কানাইঘাট থেকে চলে যেতে হবে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম রানা তার বক্তব্যে বলেন, দুর্নীতিবাজ কোন সরকারী কর্মকর্তা কানাইঘাটে থাকতে পারবেন না। যারা লোভাছড়া পাথর কোয়ারী ও জলমহাল নিয়ে দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। এছাড়া বক্তব্য রাখেন, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কেএইচএম আব্দুল্লাহ, নসির উদ্দিন প্রধান, খলিলুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহ্বায়ক আজমল হোসেন, আ’লীগের সদস্য মাহবুবুর রহমান, যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মীর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাব উদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা আছাদ উদ্দিন, ইয়াহিয়া ডালিম, আব্দুর রহমান প্রমুখ। এদিকে ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর অপসারন দাবী করে গভীর রাতে মিছিলের ঘটনায় আ’লীগের উপজেলা শাখার দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে নাম প্রকাশ না করে বলেন, ওসি সুনির্দিষ্ট ভাবে কোন দুর্নীতি বা দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি ও অসহযোগিতা করে থাকলে বিষয়টি তুলে ধরে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দরখাস্তের মাধ্যমে অবহিত করা যেতো। কিন্তু তা না করে তার অপসারণ দাবী করে মিছিল করায় স্থানীয় ভাবে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। অপরদিকে ওসিকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করে তার অপসারণের দাবী করে মিছিল করায় স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে সম্প্রতি যেকোন সময়ের চাইতে কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। থানা এলাকায় চুরি-ডাকাতি ও রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে নাশকতা মূলক কর্মকান্ড বন্ধ করতে পুলিশ সক্ষম হয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে অনৈতিক সুযোগ সুবিদা না পেয়ে ওসির উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে এ মিছিল হয়েছে বলে অনেকের অভিমত। অতিতে কানাইঘাটে কয়েকবার ওসিদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ এনে মিছিল হয়েছে। এব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর সাথে তার অপসারণ দাবী করে মিছিলের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কানাইঘাট নিউজকে বলেন, যেসব অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে মিছিল করা হয়েছে তার কোনটি সত্য নয়। উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা যখনই কোন অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেন তা তিনি নিজে তদারকি করে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করে থাকেন। বিষয় হচ্ছে সম্প্রতি থানা পুলিশ ভারত থেকে চোরাই পথ দিয়ে আসা একটি অবৈধ দামি মোটর সাইকেল আটক করে। পরবর্তীতে জিডির মাধ্যমে বিষয়টি এস.পি স্যারকে জানানো হয় এবং মামলা রুজু করা হয়। মোটর সাইকেলটি আটকের কয়েকদিন পর থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য পৌর আ’লীগের আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন আমাকে বেশ কয়েকবার বলেন। আমি বিষয়টি মামলাধীন আছে বলার পরও তিনি আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হন। এছাড়া জামাল উদ্দিন উপজেলার বাটইশাইল গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে একটি পক্ষ প্রবাসীর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ঘর পুড়ানোর একটি দরখাস্ত থানায় দাখিল করে। অভিযোগটি কয়েক বার পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত করে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তারপরও অভিযোগটি রেকর্ড করার জন্য জামাল উদ্দিন আমাকে চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু আমি নিরীহ প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি রেকর্ড করিনি। এছাড়া কানাইঘাট বাজারের শাহজালাল রেস্টুরেন্টের পিছনে অবস্থিত একখন্ড দামি ভূমি জবর দখল করতে সহযোগিতা না করা সহ আইনশৃঙ্খলা কর্মকান্ডে বিঘœ ঘটে এমন অবৈধ তদবির অগ্রাহ্য করায় ােভের বশঃবর্তী হয়ে তার বিরুদ্ধে এ মিছিল করা হয়েছে বলে জানান। বিষয়টি তিনি সিলেটের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়