কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক : আগের দিনে হাঁটা-চলা, নাম লিখতে জানা, গায়ের রং, চুল দেখে কনে পছন্দ করতেন মুরব্বিরা। তবে দিন পাল্টেছে। এখন পাত্র-পাত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। তারপর দেয়া হয় মুখাবয়ব। কিন্তু মুখাবয়ব যতো সুন্দরই হোক না কেন হাসতে বা কথা বলতে গিয়ে যদি দেখা যায় বর বা কনের ভাঙা দাঁত, ফাঁক দাঁত, মুখে দুর্গন্ধ, কালো দাগযুক্ত দাঁত তাহলে তো মাঠে মারা।
এ জন্য বিয়ের আগে বর-কনের শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মুখের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা জরুরি। এক্ষেত্রে বরের যে সমস্যাগুলো দেখা যায়-
১. অনেক ছেলেই ধূমপান করেন, তাই দাঁতে কালো দাগ পড়ে
২. অতিরিক্ত চা-কফি পানেও এটি হতে পারে
৩. মুখে দুর্গন্ধ থাকতে পারে
৪. দাঁতে পাথর জমতে পারে
৫. পানের দাগ থাকতে পারে
৬. ভাঙা দাঁতের উপস্থিতি
৭. দাঁতে ক্যারিজ থাকতে পারে
কনের বেলায় যা থাকতে পারে-
১. মাড়ি লালচে এবং ফোলাভাব
২. মুখে দুর্গন্ধ
৩. আঁকাবাঁকা, ফাঁকা দাঁত
৪. বিবর্ণ দাঁত
আবার এ সমস্যাগুলো বর-কনে দু’জনেরই থাকতে পারে।
প্রতিকার
১. ধূমপানসহ অতিরিক্ত চা-কফি পানের ফলে দাঁতে কালচে দাগের সৃষ্টি হলে স্কেলিং, স্টোন রিমুভিং পলিশিংয়ের মাধ্যমে অবাঞ্ছিত দাঁত দূর করতে হবে।
২. মুখের দুর্গন্ধ
ক. কিছু খাবার আছে যা খেলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। এর মধ্যে বেশি মসলাদার খাবার, কাঁচা পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি।
খ. বহুদিন ধরে দাঁতে পাথর জমলে
গ. মাড়িতে ইনফেকশন থাকলে
ঘ. দীর্ঘদিন ফুসফুসে ইনফেকশন থাকলে
ঙ. সাইনোসাইটিস থাকলে
চ. দাঁতে ক্যারিজ থাকলে
ছ. মুখে আলসার থাকলে
জ. মুখে ফাংগাস ইনফেকশন থাকলে ইত্যাদি।
আর এসব সমস্যা যদি আপনার থেকে থাকে তবে তার যথাযথ চিকিৎসা ডেন্টাল সার্জনের মাধ্যমে করিয়ে নিতে হবে।
৩. দাঁতে পাথর জমলে অবশ্যই স্কেলিং পলিশিং করিয়ে নিতে হবে।
৪. দাঁতে পানের দাগসহ কঠিন কোনো দাগ থাকলে ব্লিচিং করিয়ে নেয়া যেতে পারে।
৫. মুখে ভাঙা-ফেটে যাওয়া দাঁত থাকলে ক্যাপ বা ক্রাউন করে নিলে হারানো সৌন্দর্য পুরোপুরি ফিরে পাওয়া সম্ভব।
৬. চোয়ালে কোথাও দাঁত না থাকলে ব্রিজের মাধ্যমে তা পরিষ্কার করে নিতে হবে।
৭. দাঁতে ক্যারিজ থাকলে তার অবস্থান, বিস্তৃতি ও রোগের ইতিহাস জেনে দরকার হলে এক্স-রে করে ফিলিং বা রুট ক্যানেল ক্যাপ করে দাঁতের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে হবে।
৮. সুন্দর চেহারা, গায়ের রং, ভালো ত্বক সবই উপস্থিত কিন্তু হাসলেই দেখা যায় লাল টকটকে ফোলা মাড়ি তখন সবই মাঠে মারা যায়। এ ক্ষেত্রে মাড়ির চিকিৎসা করাতে হবে।
৯. আঁকাবাঁকা এবং ফাঁকা দাঁতের চিকিৎসা করাতে হবে। এই চিকিৎসা একটু ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ তাই বিয়ের কমপক্ষে এক দেড় বছর আগে থেকে এই চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
১০. অনেক রোগীই বলে থাকেন ‘দিনে ৪ বার দাঁত ব্রাশ করি তবু দাঁত হলুদ, নিষ্প্রাণ। আর কি করলে দাঁত সাদা চকচকে সুন্দর হবে।’ আসলে বিবর্ণ দাঁতের অনেক কারণ আছে যেমন-
- আঘাতের ফলে সৃষ্টি বিবর্ণ দাঁত
- টেট্রাসাইকিন পিগমেন্টেশন
- জন্মগত কারণ।
সমস্যা ও রোগের ইতিহাস জেনে দাঁত পরীক্ষা করে বিবর্ণ দাঁতে বিভিন্ন রকম চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে। যেমন- লেমিনেটিং ফিলিং, ক্রাউন ইত্যাদি। এছাড়া দাঁতে ব্লিচ করা যেতে পারে। এতে দাঁত হবে ঝকঝকে সুন্দর সাদা।
১১. দাঁতে ব্যথা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যথার কারণ খুঁজে যথাযথ চিকিৎসা করাতে হবে।
১২. এছাড়া হেপাটাইটিস, এইডস ইত্যাদ পরীক্ষা করে নেয়া যেতে পারে।
বিয়ের আগে হবু দম্পতির শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মুখের সুস্থতা অত্যন্ত জরুরি। মুখের যেকোনো সমস্যায় যথাযথ চিকিৎসার জন্য অবশ্যই অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিতে হবে। বছরে অন্তত দুবার ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিন।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়